
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ গল্লাক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানা ফেন্সি (৫৬) খুন হয়েছেন। তিনি কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য ছিলেন।
সোমবার রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে শহরের ষোলঘর পাকা মসজিদ-সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাড়ির দ্বিতীয় তলায় খুন হন ফেন্সি। তার স্বামী নিজেও আওয়ামী লীগের একজন স্থানীয় নেতা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার রাত ১১টার দিকে শহরের ষোলঘর পাকা মসজিদ এলাকার বাড়ির শোবার ঘর থেকে পুলিশ ফেন্সীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে বলে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি ওয়ালী উল্লাহ ওলি জানান।
তিনি বলেন, “মরদেহ দেখে প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত এখনো তা আমরা জানতে পারিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।”
ফেন্সীর ভাইদের অভিযোগ, বছর পাঁচেক আগে দ্বিতীয় বিয়ে করা জহিরুলই তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন।
অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি।
আটক হওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বাসায় ছিলাম না। বাসায় এসে দেখি রুমের দরজা খোলা। রুমের মেঝেতে ফেন্সীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। পরে আমার চিৎকারে লোকজন ছুটে আসে।”
জহিরুল ও ফেন্সী দুজনেরই গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নে। ১৯৮৬ সালে তাদের বিয়ে হয়। তাদের তিন মেয়ের মধ্যে দুইজন দেশের বাইরে থাকেন। আরেকজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে পড়ছেন।
ফেন্সীর ভাই ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাঈমুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, তার বোনের ‘অনুমতি না নিয়ে’ জহিরুল বছর পাঁচেক আগে জুলেখা নামে আরেক নারীকে বিয়ে করেন, যা নিয়ে পরিবারে অশান্তি চলছিল।
“আমার বোন ফেন্সীকে অ্যাডভোকেট জহিরুল হত্যা করেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
ফেন্সীর আরেক ভাই ফোরকান আহমেদ বলেন, “এই ঘটনা অ্যাডভোকেট জহিরুল ছাড়া আর কেউ ঘটাতে পারে না। সে রাত ১১টার দিকে আমাদের খবর দেয়। গিয়ে দেখি আমার বোনের রক্তাক্ত দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখেছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
শাহিন সুলতানা ফেন্সী বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় মহিলা সংস্থা, চাঁদপুরের চেয়ারম্যান ছিলেন ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত। আওয়ামী লীগের চাঁদপুর জেলা শাখার মহিলা সম্পাদিকার দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন।
গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে আসার আগে ফেন্সী চাঁদপুরের বলাখাল মকবুল আহমেদ ডিগ্রি কলেজেও শিক্ষকতা করেছেন।
Be the first to comment