স্কুলে ছাত্র রাজনীতির বিরোধীতা করলেন ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের- ফাইল ছবি

স্কুল পর্যায়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই ছেলেমেয়েদের পিঠে বই-পুস্তকের বোঝা, তার উপর রাজনীতির বোঝা চাপানোর দরকার নেই।’

শনিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছাত্রলীগ আয়োজিত বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগমন্ত্রী আরও বলেন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্র রাজনীতি থাকতে পারে। এসব জায়গায় ছাত্রলীগের কমিটি আরও পরিশীলিত করতে হবে। সেখানে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সে বিষয়ে ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে হবে। ছাত্রলীগের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের গুণগত গভীরতা নিয়ে কিছু কিছু জায়গায় আমার প্রশ্ন আছে। সামনে নির্বাচন, তাই ছাত্রলীগের কাজের জন্য দলের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।

গত ২২ নভেম্বর ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সারা দেশে স্কুল পর্যায়ে কমিটি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ছাত্রলীগের এই সিদ্ধান্তে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সমালোচনা করছেন। এরই মধ্যে ওবায়দুল কাদের স্কুলে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে এ কথা বললেন।

অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের আলোচনা সভাগুলো ঘরোয়া সেমিনার ধরনের না হওয়াই ভালো। এমন আলোচনা সভা বটতলায় হওয়া ভালো। কারণ, এমন মিলনায়তনে একটি হল শাখা ছাত্রলীগের কমিটির নেতা-কর্মীদের স্থান সংকুলান হয় না। এ ছাড়া যারা প্রতিদিন একই কথা শুনে অভ্যস্ত, তাদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের প্রতি যেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয়—সে জন্য বটতলায় এসব অনুষ্ঠান হলে ভালো।

রংপুর নির্বাচন প্রসঙ্গে কাদের

এ সময় রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিষয়ে সংবাদপত্রের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রংপুর নিয়ে কত রকমের লেখা হচ্ছে। কেউ কেউ আদাজল খেয়ে রাজনৈতিক কারণে নেমে দাঁড়িয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। সেটা আমরা বুঝি। ফার্স্ট পেজ, ব্যাক পেজ সরকারের বিরুদ্ধে যা লেখা যায়! কুমিল্লায় আমরা হেরেছি। কিন্তু গতবারের চেয়ে ৩৫ হাজার ভোট বেশি পেয়েছি, সেটা তো কেউ লেখেনি! যাঁরা সমালোচনা করেন, তাঁদের কথা বলছি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, রংপুরে আওয়ামী লীগ মেয়র নির্বাচনে দ্বিতীয় হয়েছে। কিন্তু কাউন্সিলরে প্রথম হয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের ১৪ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, আরও ছয়জন স্বতন্ত্র কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করবে। আর বিএনপির সাতজন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় পার্টির দুজন। এসব লেখা হয় না। এসব না লিখে বলা হয়, আওয়ামী লীগ তলানিতে চলে গেছে।

বিএনপিকে ‘অদ্ভুত’ দল হিসেবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি জিতলে বলে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা আছে। হেরে গেলে বলে আস্থা নেই। কুমিল্লায় আস্থা ছিল, রংপুরে আস্থা নেই। কেমনে আপনাদের টেনে তুলবে? আপনারা সেকেন্ড না তো, আপনারা থার্ড। থার্ডকে টেনে তুলবে কীভাবে? তাহলে কি জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসন আপনাদের দিতে হবে—আস্থা রাখার জন্য? অদ্ভুত এক দল।’