
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা দুটি মামলার রায়ে ১১ জনকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে তাদের, যা না দিতে পারলে আরও ৬ মাস কারাগারে থাকতে হবে। এই মামলায় হুমায়ুন কবির ওরফে কবির নামে একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
রোববার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ও ঢাকা মহানগর আদালতে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জাহিদুল কবির ২৮ বছর আগে এরশাদ সরকারের আমলে করা মামলা দুটির রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের শুরুতে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন বিচারক। দুপুর ১টার দিকে তিনি রায় ঘোষণা করেন। গত ১৬ অক্টোবর মামলা দুটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছিল।
১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্যরাতে ফ্রিডম পার্টির নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে গুলি ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ঘটনার সময় তিনি ওই বাড়িতেই ছিলেন।
এ ঘটনায় বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা করে।
হামলাকারীরা ‘কর্নেল ফারুক-রশিদ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়।
সাজার আদেশ পাওয়া এই ১১ আসামি হলেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আবদুর রশীদ, মো. জাফর আহম্মদ, হুমায়ুন কবির ওরফে হুমায়ুন, মিজানুর রহমান, শাজাহান বালু, গাজী ইমাম হোসেন, খন্দকার আমিরুল ইসলাম কাজল, গোলাম সারোয়ার ওরফে মামুন, ফ্রিডম সোহেল, সৈয়দ নাজমুল মাকসুদ মুরাদ ও জর্জ মিয়া।
দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে রশীদ, জাফর ও হুমায়ুন কবির ওরফে হুমায়ুন পলাতক। বাকিদের মধ্যে জামিনে থাকা মিজান, ইমাম হোসেন, কাজল রায়ের জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কারাগারে থাকা মামুন, সোহেল, মুরাদ ও জর্জ মিয়াকেও আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
কিন্তু জামিনে থাকা শাজাহান বালুর জন্য বেশ কিছু সময় অপেক্ষার পরও তিনি না আসায় বিচারক তার অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করেন।