
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হাতাহাতির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, আইনের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা নেই।
‘বারবার আদালতে অনুপস্থিত থেকে ও আদালতের কাছ থেকে সময় নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিচারকাজ বিলম্বিত করছেন বলেও অভিযোগ তার।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশান-২ এ ইয়ুথ ক্লাব মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে খালেদা জিয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনিই আদালতকে হেনস্তা করেছেন। আদালতের কাছ থেকে বারবার সময় নিয়ে আট মাস বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত করেছেন। তার কাছে জানতে চাই, তিনি কোন আইন ও নিয়মের বলে বারবার বিচারিক কার্যক্রম বিলম্বিত করছেন।’
লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিন তার সংবর্ধনাকালে রাস্তায় যানজট ও জনদুর্ভোগের প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনায় আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী কী রাস্তায় নেমে এসেছেন? খালেদা জিয়া দেশে ফেরার দিন বিএনপির যা উপস্থিতি, আওয়ামী লীগের সংবর্ধনায় তার চেয়ে বেশি ছিল মহিলা উপস্থিতি। তারপরও কেউ রাস্তা অবরোধ করে, স্লোগান তুলে দলীয় নির্দেশ অমান্য করেননি।
অথচ বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তা দখল করে মিছিল করেছেন। এমন অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা করেছেন যে, এরা ক্ষমতা পেলে কী করবেন? এটা তো দেশের জনগণ হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সংবর্ধনায় এত যে দুর্ভোগ হলো, সেটা মিডিয়াতে তেমন একটা দেখা গেল না। কোনো কোনো মিডিয়া এটা এড়িয়ে গেছে। অথচ আওয়ামী লীগের পান থেকে চুন খসলে ধরে বসে। আওয়ামী লীগের বেলায় বড় বড় রিপোর্ট করেন, আর বিএনপির বেলায় দেখলাম সাংবাদিকরা সেটা ভুলে গেছেন।
কারো কারো বেলায় জনদুর্ভোগকে তারা গ্রাহ্য করেন না, আর আওয়ামী লীগ করলে বিশাল খবর হয়। আজও এটা যদি আওয়ামী লীগের মাধ্যমে হতো, তাহলে বলা হতো রাস্তায় সীমাহীন জনদুর্ভোগ। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেনি, সেজন্য কেউ প্রশংসাও করেনি। এটা তো সুবিচার নয়, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নয়।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাংবাদিক বন্ধুদের অনুরোধ করবো, যা সত্য তাই বলুন। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলবেন, আওয়ামী লীগের প্রশংসা লিখবেন, সমালোচনা করবেন—স্বাগত জানাই। গঠনমূলক সমালোচনা শুদ্ধ করে। কিন্তু পক্ষপাতিত্ব করা বোধ হয় সঠিক নয়।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমিও সংবাদিকতা করেছি। আমি কখনো মিডিয়াকে আক্রমণ করে কথা বলি না। কিন্তু খালেদা জিয়ার সংবর্ধনায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টির বিষয়টি অনেকেই চেপে যাওয়ায় আমার একটু কষ্ট লাগলো, সেজন্য বলেছি। শুধু বলবো, সুবিচার করবেন।’
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে দেওয়া আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়নের বিরোধিতা ছিল না বলেও দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো বলেনি, তারা সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিরুদ্ধে এবং নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা যাবে না। আওয়ামী লীগ বলেছে, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রয়োজন মনে করলে আইন অনুযায়ী সেনাবাহিনী মোতায়ন করবেন।’
নতুন সদস্য সংগ্রহ সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোনো চিহ্নিত চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী এবং সাম্প্রদায়িক কোনো ব্যক্তি ও সাম্প্রদায়িক শক্তির দোসর আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। নতুন সদস্য সংগ্রহে দলের টার্গেট প্রথম ভোটার যারা হয়েছেন তারা এবং নারীরা। তরুণ ও নারী ভোটারদের সদস্য করাই মূল টার্গেট।’