রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত,চীন ও রাশিয়ায় তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ ফখরুলের

কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিরসনে সরকারকে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এজন্য মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়ে আসা রাশিয়া, চীন ও ভারতকে বুঝিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সার্কিট হাউস সড়কে জেলা বিএনপি অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর উচিত ভারত, চীন ও রাশিয়ায় যাওয়া; যেন তারা কোনো নেতিবাচক অবস্থান না নিতে পারে।’

মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ-সেনা চৌকিতে হামলার জেরে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন শুরু হয় গত ২৫ আগস্ট। প্রাণ বাঁচাতে এরপর বাংলাদেশ অভিমুখে শুরু হয় রোহিঙ্গাঢল; জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত এসেছে চার লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা।

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির জাতীয় ঐক্যের ডাকে আওয়ামী লীগ ও সরকারের সাড়া পাওয়া যায়নি। আমরা দেখেছি, এ ব্যাপারে সরকারের কোনো আন্তরিকতা নেই। তারা এ সমস্যার সমাধান কতটুকু সঠিকভাবে করতে আগ্রহী, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে। অনেকে অনেক কথা বলছে—নোবেল পুরস্কারের কথা বলছে, অন্যান্য সুবিধার কথা বলছে; আমরা সে কথা বলতে চাই না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, আন্তরিকতার সঙ্গে এর সমাধান করুন। বিভেদ না করে, বিভক্তি না এনে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের সব অভ্যন্তরীণ শক্তিকে এক করে এ সংকট থেকে উত্তরণে একটি জাতীয় ঐক্যের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শরণার্থী ক্যাম্পে ত্রাণ কাজে সেনাবাহিনী মোতায়েন করায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আমরা চাই, সেনাবাহিনীর কর্মপরিধি আরও বিস্তৃত করা হোক। এটা অব্যাহত থাকুক।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘সরকার বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ বিলি-বণ্টন করছে, কিন্তু নিজেরা কোনো ত্রাণ দিচ্ছে না।’
বিএনপির ২২ ট্রাক ত্রাণ বিতরণে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পরে ওই ত্রাণ আমরা বিতরণ করেছি। বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। একটা কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সরওয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, কেন্দ্রীয় নেতা শরিফুল আলম, শহিদুল ইসলাম বাবুল, জেলা বিএনপি সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্নাসহ অনেকে।