অনলাইন ব্যবসায় করারোপ ডিজিাটাল যুগের পরিপন্থি

e commerce
ই-কমার্স

২০১৮-২০১৯ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইনে বেচা-কেনায় ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে । এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট ৪ শমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যদিকে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবের মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের দেশের বাজারে ব্যবসাকে করের আওতায় নিয়ে আসার আইনি বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

অনলাইন মার্কেট প্লেস ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুগল-ইউটিউবের দেশের বাজারে ব্যবসাকে করের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাবটি যুক্তিযুক্ত। তবে, অনলাইনে কেনাবেচা প্রক্রিয়ায় ৫ শতাংশ ভ্যাট দেশের বিকাশমান ই-কমার্স খাতকে বড় ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবে। এ ধরনের কর প্রস্তাব ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল চিন্তারও পরিপন্থী।

ই-কমার্স সেবায় নতুন ভ্যাট আরোপ সম্পর্কে অনলাইন মার্কেটপ্লেস আজকের ডিল ডটকমের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মশরুর মনে করেন, এ ভ্যাট আরোপ হবে দেশের বিকাশমান ই-কমার্স সেবায় বড় ধাক্কা। কারণ দেশে অনলাইনে কেনাবেচা সবেমাত্র শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঢাকা এবং বড় বিভাগীয় শহরের বাইরে এ সেবা খুব একটা প্রসার ঘটেনি। প্রত্যেকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এখনও ভর্তুকি দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ অবস্থায় ই-কমার্স সেবায় ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ এ সেবার বিস্তৃতি রুদ্ধ করবে।

এ ব্যাপারে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের সাবেক সভাপতি রাজীব আহমেদ বলেন, ২০১৫ সালের বাজেটেও ই-কমার্স সেবার ওপর ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল। পরে বাজেট পাসের পূর্ব মুহূর্তে অর্থমন্ত্রী তা প্রত্যাহার করেন। আশা করছি, এবারও তিনি এই ভ্যাট প্রস্তাব প্রত্যাহার করবেন।

তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়ার সিনিয়র ফেলো আবু সাঈদ খান বলেন, ই-কমার্স সেবায় ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ এ খাত সম্পর্কে অর্থমন্ত্রীর অজ্ঞতার পরিচয়।

তিনি আরও বলেন, ইউটিউব, গুগল, ফেসবুকের মতো বিদেশি কোম্পানির দেশের বাজারে অর্জিত আয়ের ওপর করারোপের জন্য আইনি বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করা ইতিবাচক।

বিদেশি কোম্পানিকে করের আওতায় নিয়ে আসার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ভার্চুয়াল ও ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে প্রচুর আয় করছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে তেমন একটা কর পাওয়া যাচ্ছে না।

ভার্চুয়াল ও ডিজিটাল লেনদেনের মতো বিষয়টি তুলনামূলক নতুন বিধায় এসব লেনদেনকে করের আওতায় আনার মতো পর্যাপ্ত বিধান কর আইনে ছিল না। এ কারণে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবের মতো বিদেশি কোম্পানির অর্জিত আয়ের ওপর করারোপের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করা হচ্ছে।

Be the first to comment

Leave a Reply