নাফ নদীতে ফের নৌকাডুবি; ১২ জনের লাশ উদ্ধার

নাফ নদীতে নৌকা ডুবে নিহত শিশুদের পাশে স্বজনদের আহাজারি

রাখাইন রাজ্যে থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদীতে ডুবে গেছে। এ ঘটনায় সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সাবরাং ইউনিয়নে শাহপরীর দ্বীপের গুলারচর ও জালিয়া পাড়া থেকে ১২ মরদেহ উদ্ধার করেছে বিজিবি। যাদের মধ্যে দশ জনই শিশু।

এর আগে রাতে ১৭ জনকে জীবত উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, নৌকাডুবির এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছে।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সময় রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাটি ডুবে যায় জানিয়ে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যান্ট কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর ঘোলারচর পয়েন্টে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাটি ডুবে যায়।

তিনি জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ রোহিঙ্গা উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে রাতে ১০ শিশুসহ ১৭ রোহিঙ্গাকে নাফ নদী থেকে জীবিত উদ্ধার করে বিজিবি সদস্যরা।

নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া মিয়ানমারের নাগরিক ফাতেমা বেগম জানান, সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে তারা ৬০ জনের একটি দল নৌকায় করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছিলেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুই ছিল বেশি। নাফ নদীতে হঠাৎ প্রচণ্ড বাতাসে উল্টে গিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। ওই সময় তাদের চিৎকারে বিজিবির একটি টহল দল বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ১৭ জনকে উদ্ধারে সক্ষম হয়।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন খান জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।

তিনি উদ্ধার রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে বলেন, ডুবে যাওয়া নৌকাতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি লোক ছিল। এ কারণেই নৌকাটি ডুবে যায়। উদ্ধার পাওয়া রোহিঙ্গাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনো ৩১ জন নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খোঁজে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চলছে।

গত ২৫ আগস্ট মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরুর পর সৃষ্ট সহিংসতা থেকে বাচঁতে নাফ নদী ও সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসতে গিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই ২৭টি নৌকাডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪৭ জন রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।