জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে যশোরে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে সোয়াট

যশোরে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে যশোরের একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দুইটা থেকে যশোর শহরের ঘোপ নোয়াপাড়া সড়কের ওই বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী।

পুলিশ বলছে, এই বাড়িতে গুলশানের হোলি আর্টিজানে হামলায় জড়িত ও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত জঙ্গি নুরুল ইসলাম মারজানের বোন থাকতে পারেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।

জঙ্গি অবস্থানের খবর পেয়ে রোববার গভীর রাতে পুলিশ শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে মসজিদের পেছনের ওই ভবন ঘিরে ফেলে।

সরেজমির ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির প্রবেশের রাস্তায় পুলিশ অবস্থান নিয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দা বা সাংবাদিকদের ওই বাড়ির দিকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

সকাল ১০টার পরপরই সোয়াট সদস্যরা ওই বাড়ির কাছে পৌঁছালে শুরু হয় অভিযানের প্রস্তুতি। মাইকিং করে বাড়ির সন্দেহভাজন বাসিন্দাদের বেরিয়ে আসতে বলা হয়। তার আগেই ভবনের অন্য পাঁচটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।

যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ‘অন্যতম হোতা’ নব্য জেএমবি নেতা মারজানের বোন খাদিজা ও তার স্বামী মশিউর রহমান ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে অবস্থান করছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।

“খাদিজাকে বারবার বের হতে অনুরোধ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।”

বাড়িটির মালিক যশোর জেলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক হায়দার আলী সপরিবার স্কুলের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। নিজের বাড়ির সব ফ্ল্যাট তিনি ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।

সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি এক আত্মীয়ের কাছে খবর পান পুলিশ তার ঘোপ নওয়াপাড়ার বাড়ি ঘিরে রেখেছে। সকালে তিনি গিয়ে বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। হায়দার বলেন, এক বছর আগে মশিউর রহমানকে দোতালার পশ্চিম পাশের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া দেন।

“ বাড়ি ভাড়া নেয়ার সময় মশিউর জানিয়েছিল সে একটি হারবাল কোম্পানিতে চাকরি করে। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সে ওই ফ্ল্যাটে থাকে। যত দূর জানি অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা যার যার বাসাতেই আছেন।”

প্রতিবেশীরা জানান, মশিউর ও খাদিজার সঙ্গে তিনটি শিশু রয়েছে ওই বাসায়। তবে বাসার ভেতরে কতজন আছে তা পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি।

গত বছর জুলাই মাসে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত্যার ঘটনার পর তদন্তের মধ্যে মারজানের নাম আসে।

পাবনার হেমায়েতপুরের আফুরিয়া গ্রামের হোসিয়ারি শ্রমিক নিজাম উদ্দিনের ছেলে মারজান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও লেখাপড়া শেষ করেননি।

চলতি বছর ৬ জানুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারজান নিহত হন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তার আগে, গতবছর ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের এক জঙ্গি আস্তানা থেকে তিন জঙ্গির স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়; তাদের মধ্যে মারজানের স্ত্রী আফরিন ওরফে প্রিয়তিও ছিলেন।