এবার ভারত থেকে এলো ৭শ টন ত্রাণ

ভারত থেকে আসা ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা

এবার রোহিঙ্গোদের জন্য ত্রাণ পাঠালো ভারত। ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে প্রায় ৭০০ টন ত্রাণ এসেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের এক নম্বর জেটিতে এই ত্রাণ গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। সকালে ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ঘড়িয়াল’–এ এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা তাঁর হাতে এই ত্রাণ তুলে দেন।

মিয়ানমারে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান সহিংসতা শুরু হওয়ার পর প্রথমবার জাহাজে করে বড় আকারে এই ত্রাণ পাঠাল ভারত। গতকালের পাঠানো ত্রাণ ৬২ হাজার পরিবারকে বিতরণ করা হবে। পাটের ব্যাগে থাকা এ ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, লবণ, চিনি, রান্নার তেল, চা, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, মশারি ও সাবান। প্রতি পরিবারে পাঁচ থেকে ছয় সদস্য হিসাব করে প্যাকেট তৈরি করা হয়েছে। এ হিসাবে এই ত্রাণ পাচ্ছে ৩ লাখ ৭২ হাজার জন রোহিঙ্গা।

অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, চার লাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। ভারত এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বন্ধু, প্রতিবেশী এবং অংশীদার হিসেবে সাড়া দিয়েছে। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে উড়োজাহাজে করে গত ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর দুই দফা ১০৭ টনের ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। এটি ত্রাণের দ্বিতীয় চালান। ফ্যামিলি প্যাক হওয়ায় ত্রাণ বিতরণেও সুবিধা হবে।

অন্যদিকে চীন থেকে পাঠানো দ্বিতীয় চালানে সাড়ে ৫৩ টন ত্রাণ নিয়ে একটি উড়োজাহাজ সকালে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামে।

চীন থেকে বৃহস্পতিবার আসা দ্বিতীয় চালানে রয়েছে তিন হাজার কম্বল। বাংলাদেশে চীন দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সেলর লি গুয়াংজুন বিমানবন্দরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে এই ত্রাণ হস্তান্তর করেন।

 

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার একটি চীনা বিমানে ৫৭ দশমিক শূন্য তিন টন ত্রাণ এসেছিল। সেখানে ছিল ২২০০ তাঁবু। এসব ত্রাণ কক্সবাজারের উখিয়ায় পাঠানো হচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং চিয়াং সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, শরণার্থীদের জন্য তার দেশ মোট ১৫০ টন জরুরি ত্রাণ চট্টগ্রামে পাঠাচ্ছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ, রেডক্রস ও রেডক্রিস্টেন্টের দেওয়া মোট এক হাজার ৩০৩ টন ত্রাণ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে।

এরমধ্যে ভারত দুটি বিমান ও একটি জাহাজে ৮০৭ টন, চীন দুটি বিমানে ১১০ দশমিক ৫৩ টন, সৌদি আরব একটি বিমানে ৯৪ টন, ইন্দোনেশিয়া আটটি বিমানে ৭৭ টন, ইরান দুটি বিমানে ৬৮ টন, মরক্কো একটি বিমানে ১৪ টন ও মালয়েশিয়া একটি বিমানে ১২ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে।

এছাড়া মালয়েশিয়ার রেড ক্রিসেন্ট ১০১ দশমিক ৫ টন ও জাপানি রেডক্রস ১৮ দশমিক ৫ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে বাংলাদেশে।