কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৪ কর্মকর্তার দেশত্যাগ ঠেকাতে বলেছে দুদক

দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়ায় কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন চার কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপে করতে বলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

তারা হলেন- কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মদ, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুর-উজ-জামান চৌধুরী, কোম্পানি সচিব মো. আবুল কাশেম প্রধানীয়া
ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর বিভাগ) এ কে এম খালেদুল ইসলাম।

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর নুরুজ্জামান ও খালেদুলকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পেট্রোবাংলা। হাবিব উদ্দিনকে সরিয়ে আনা হয়েছে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দপ্তরে। কাশেম প্রধানিয়াকে সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

এক লাখ ১৬ হাজার টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের পেয়ে দুদক তার অনুসন্ধানে নামার পর এদের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

মঙ্গলবার কমিশন থেকে ইমিগ্রেশন বিভাগে পাঠানো এক চিঠিতে অনুরোধ করা হয়, তারা যাতে কোনোভাবে দেশত্যাগ করতে না পারে।

কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, দুদকের অনুসন্ধান কমিটির প্রধান মো. শামসুল আলম এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এই কমিটিতে দুদকের সহকারী পরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন এবং সহকারী পরিচালক এ এস এম তাজুল ইসলাম সদস্য হিসেবে রয়েছেন। তাদের কাজ তদারক করছেন দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলমকে।

কমিটি গঠনের পরপরই সোমবার দিনাজপুরে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কয়লা খনি পরিদর্শনে যায় দুদক।

মঙ্গলবার ঢাকায় পেট্রোবাংলায় গিয়ে সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি দুদকে পাঠাতে বলেন কমিটির সদস্যরা।

বড় পুকরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির কয়লা দিয়ে চলে পাশে অবস্থিত ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লা খনির ইয়ার্ডেই থাকত। কিন্তু হঠাৎ করে কয়লা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় গত রোববার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন।

অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

দুদক কর্মকর্তা সোমবার পরিদর্শনে গিয়ে খনির ইয়ার্ডে দুই হাজার টন কয়লা পান, যদিও কাগজে-কলমে এক লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা।

কয়লা কীভাবে উধাও হল, তার ‘পূর্ণ তদন্ত’ করতে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এই কেলেঙ্কারির জন্য কয়লা খনির কর্মকর্তাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।

Be the first to comment

Leave a Reply