
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আসা সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে হবে। ওই দেশে নিরাপদ অঞ্চল গঠন করে তাদের সুরক্ষা দিতে হবে কারণ রোহিঙ্গা সংকটের সৃষ্টি করেছে মিয়ানমার। তাদেরই এর সমাধান করতে হবে। প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
সোমবার জাতীয় সংসদে রোহিঙ্গা বিষয়ক সাধারণ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ ও তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের জোরালো কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের প্রস্তাব লাশ করেছে জাতীয় সংসদ।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপু মনি সংসদের কার্যবিধির ১৪৭ (১) ধারায় এই প্রস্তাব আনেন। এর ওপর প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতাসহ ১৮ জন মন্ত্রী-সাংসদ আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা শেষে কণ্ঠভোটে এই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়৷
সব রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে হবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিচ্ছে৷ তবে তাদের সবাইকে ফেরত নিতে হবে। প্রয়োজনে মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ অঞ্চল গঠন করে নিরাপত্তা দিতে হবে। কফি আনান কমিশন যে সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে৷ কারণ এটা তাদের সরকারই গঠন করেছে৷ এতে কোনো সমস্যা থাকলে আলোচনা করতে পারে৷
রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে কেউ যেন রাজনৈতিক ফায়দা বা আর্থিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা না করেন, সেই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষের খাবার দিই৷ সেই সঙ্গে কয়েক লাখ মানুষকে খাবার দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। সত্যিকার যারা এসেছে তাদের ছবিসহ তালিকা করা হবে৷
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছে সে দৃশ্য ভেসে ওঠছে। আমাদের জন্য কঠিন এত মানুষ রাখা, আশ্রয় দেওয়া। তারা মানুষ, তাদের ফেলে দিতে পারি না। আমারওতো রিফিউজি ছিলাম। রিফিউজি থাকার যন্ত্রণতা কি তা আমরা বুঝি।’
রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী শিশু, নৌকা ডুবি হয়ে লাশ ভাসছে। এমনিক গুলি খাওয়া লাশ নদীতে সাগরে ভেসে আসছে। সেখানে আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয় হচ্ছে। একটা জাতির প্রতি এ আচরণ কেন, তা বোধগম্য নয়।
রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধামন্ত্রী বলেন, কিন্তু মিয়ানমারকে স্পস্ট করে মানতে হবে, এরা তাদের নাগরিক। বাঙ্গালিতো শুধু বাংলাদেশে নেই, পশ্চিমবঙ্গেও আছে। তিনি বলেন, কারো সঙ্গে সম্পর্ক বৈরী হোক চাই না। শত শত বছর ধরে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে বাস করছে। হঠাৎ তাদের বিতাড়িত করার ফলাফল কী দাড়াতে পারে, তারা কি সেটা চিন্তা করছে? প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণেরও সমালোচনা করেন৷ তিনি এসব বন্ধ করারও আহ্বান জানান৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্ত বিশ্বে যেন মুসলমানদের উপর আক্রমণ করার মানসিকতা দেখতে পাচ্ছি। সমস্ত মুসলিম উম্মা যদি অনুভব করতে পারত, ঐক্যবদ্ধ থাকত, কেউ মুসলমানদেরওপর আক্রমন করতে পারত না।
Be the first to comment