
মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইসহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। বুধবার টাঙ্গাইলের ১নং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল মনসুর মিয়া এই অভিযোগ গঠন করেন।
সকালে সাংসদকে কাশিমপুর কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হয়। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির ছিলেন এই মামলায় কারাগারে বন্দী চার আসামি এবং জামিনে থাকা তিন আসামি। আসামিদের পক্ষ থেকে মামলাটি পুনঃতদন্ত এবং অভিযোগ গঠন না করার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন দুটি খারিজ করে দেন।
অভিযোগ গঠনের পর আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৮ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
এর আগে এ হত্যা মামলায় আটবার তারিখ পড়লেও অসুস্থতার কারণে সাংসদকে হাজির করা হয়নি। মামলার প্রধান আসামি আমানুর রহমান খান রানা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাংসদ। সর্বশেষ সাংসদ আমানুর পাইলসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আদালতে হাজির করা যায়নি। তখন অভিযোগ গঠনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল।
দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর সাংসদ আমানুর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন। এর আগে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে বেশ কয়েক দফা আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজপাড়া এলাকায় বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
প্রথমে থানা-পুলিশ ও পরে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এই মামলায় আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন। আদালতে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যায় সাংসদ আমানুর ও তাঁর তিন ভাইয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান।
গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি আমানুর, তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আমানুরের তিন ভাই পলাতক রয়েছেন।
Be the first to comment