বিএনপিকে অপেক্ষা করার পরামর্শ দিলেন ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য পুলিশের অনুমতির অপেক্ষায় থাকতে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ওই সমাবেশের অনুমতি আওয়ামী লীগ নয়, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেবে। সরকারের সঙ্গেও এর কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, পুলিশ সমাবেশের অনুমতি বিষয়ে কী জবাব দেয়, সেটার জন্য বিএনপি অপেক্ষা করুক। হঠাৎ করে গণতন্ত্রের সঙ্গে তাদের সমাবেশকে কেন মেলাচ্ছে? দেশে গণতন্ত্র আছে কি-না, তার সঙ্গে বিএনপির এই সমাবেশের অনুমতির তো কোনো সম্পর্ক নেই।

‘গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকার বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দেবে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় বহুবার সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচির জন্য তিনদিন আগে অনুমতি চাইলেও পুলিশ দেয়নি। পরে দলের কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ তৈরি করা হলে পুলিশ সেটাও ভেঙে দেয়। দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে ঢুকে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। ‍

তিনি আরো বলেন, ২১ আগষ্ট সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে হাওয়া ভবনের নির্দেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। বোমা মেরে মানুষ মারা হয়েছিল। বিএনপিকে তো আর এ অবস্থায় পড়তে হয়নি। সেদিন গণতন্ত্র কোথায় ছিল? এখন গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন.বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের মাজারে যেতে দেওয়া হয়নি বলে দলটির নেতারা যে অভিযোগ করেছেন তার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মিথ্যা কথা বলছে দলটি। ইচ্ছা করে না গিয়ে এখন সরকারকে অপবাদ দিচ্ছে তারা।

বুধবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ায় আওয়ামী লীগ ঘোষিত সারাদেশে সাতদিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলের সাংস্কৃতিক উপ-কমিটি এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে নিজে বলেছেন জিয়ার কবরে যেতে বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কোন বাধা দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছিল। তবে সিপিএ সম্মেলনের কারণে শৃঙ্খলার সঙ্গে কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি সেখানে না গিয়েই বলছে সরকার অনুমতি দেয়নি। মিথ্যা কথা বলছে বিএনপি।

ইচ্ছা করে না গিয়ে এখন সরকারকে অপবাদ দিচ্ছে। সরকারকে অপবাদ দিতেই বিএনপি ‘মাজার পলিটিক্স’ করছে।

এর আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এতদিন এই ভাষণ ছিল বাঙালি জাতির সম্পদ। এখন ইউনেস্কোর স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে সেই ঐতিহাসিক ভাষণটিই গোটা বিশ্বের সম্পদে পরিণত হয়েছে।

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণার পাঠক অনেক। কিন্তু ঘোষক একজনই। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের।