মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে: সুষমা

শেখ হাসিনা ও সুষমা স্বরাজ বৈঠক

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফেরত নিতে হবে মিয়ানমারকে। রোববার সন্ধায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন সুষমা।

দুই দিনের সফরে রোববার সকালে ঢাকায় আসার পর সোনারগাঁওয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর সন্ধ্যায় গণভবনে যান সুষমা।

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের বলেন, “মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে।”

রোহিঙ্গা নাম উচ্চারণ না করে শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ার কথা বললেও সন্ত্রাসীদের শাস্তির কথাও বলেন সুষমা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, সুষমা স্বরাজ তার ভাষায় বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে বাংলাদেশের বোঝা হিসেবেও আখ্যায়িত করেন এবং বলেন, বাংলাদেশ কতদিন এই ভার বহন করবে? এর স্থায়ী সমাধান অবশ্যই করতে হবে।

এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য রাখাইনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকার ওপরও জোর দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সৌজন্য সাক্ষাতের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামনিয়ম জয়শংকর এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মিত্রবাহিনীর কিছু সমরাস্ত্র শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবেপ্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন সুষমা স্বরাজ

সৌজন্য সাক্ষাতের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর ব্যবহৃত কিছু সমরাস্ত্র শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দুই দেশের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে ভারতের প্রতি অনুরোধ জানানে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এ বিষয়ে তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত লোকজনের মাতৃভূমিতে ফেরার মধ্যেই সেখানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। আমাদের দৃষ্টিতে রাখাইন রাজ্যের একমাত্র স্থায়ী সমাধান হচ্ছে দ্রুত সেখানে আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা, যা সেখানকার সব জনগোষ্ঠীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে আমাদেরও সমর্থন রয়েছে।’

 

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। বৈঠক শেষে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিবৃতি দেন।

এর আগে বেলা পৌনে দুইটার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় পৌঁছান।