বিশ্বকাপ থেকে বাদ যুক্তরাষ্ট্র, চিলি ও নেদারল্যান্ডস

নেদারন্যান্ডের স্বপ্ন ভঙ্গে হতাশ এক খেলোয়ার

ধরাশায়ি শক্তিশালি নেদাল্যান্ডস

বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়েছে ২০১০ সালের রানার্সআপ এবং ২০১৪ সালের তৃতীয় স্থান অর্জনকারী নেদারল্যান্ড। সুইডেনকে ২-০ গোলে পরাজিত করা সত্ত্বেও বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ল নেদারল্যান্ডস। সুইডেনকে ৭ গোলের ব্যবধানে হারাতে পারলে প্লে-অফে জায়গা পেত ডাচরা। তবে ২-০ ব্যবধানের জয় পাওয়ায় সুইডেনের সমান ১৯ পয়েন্ট হওয়া সত্ত্বেও প্লে-অফে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হয় নেদারল্যান্ডস। ফলে ডাচদের ছাড়াই এবার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে।

শঙ্কা কাটিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে পর্তুগাল। মঙ্গলবার রাতে ‘বি’ গ্রুপের বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে সুইজার‌ল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দল।জিততে না পারলে প্লে-অফে- এমন সমীকরণ নিয়েই ঘরের মাঠে সুইজারল্যান্ডকে আতিথ্য দেয় পর্তুগাল। ৪১তম মিনিটে ইয়োহান দোউরোর গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বিরতির পর আন্দ্রে সিলভার গোলে দারুণ
জয় দিয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় পর্তুগিজরা।

অন্যদিকে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে বেলারুশকে ২-১ গোলে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে ফ্রান্স।

হেরে গেলেও অবশ্য বিশ্বকাপের স্বপ্ন টিকে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে হলে দুই লেগের প্লে-অফের বাধা পেরুতে হবে সুইসদের।

যেভাবে বাদ পড়লো যুক্তরাষ্ট্র

ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর কাছে হেরে হৃদয় ভাঙল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে ত্রিনিদাদের কাছে ১-২ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ল যুক্তরাষ্ট্র। টানা ছয়টি বিশ্বকাপে খেলার পর ২০১৮ বিশ্বকাপে থাকছে না মার্কিনীরা ।

জয় কিংবা ড্র হলেই বিশ্বকাপের স্বপ্ন টিকে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের। জিতলে সরাসরি বিশ্বকাপে এবং ড্র করলে কমপক্ষে প্লে-অফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার সুযোগ থাকবে- এমন সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে কনক্যাকাফ অঞ্চলের পয়েন্ট টেবিলের তলানির দল ত্রিনিদাদের কাছে অপ্রত্যাশিত হারে ছিটকে পড়ল আমেরিকা।

হতাশ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থকদের প্রাণহীন গ্যালারি

যুক্তরাষ্ট্র হেরে গেলেও অন্য দুটি ম্যাচের ফলাফল অনুকূলে আসলে তাদের বিশ্বকাপের স্বপ্ন টিকে থাকতো। তবে পানামা ও হন্ডুরাস হোম ম্যাচে যথাক্রমে কোস্টারিকা ও মেক্সিকোকে হারিয়ে আমেরিকানদের স্বপ্ন চূর্ণ করে দেয়।
উত্তর, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চল (কনক্যাকাফ) থেকে শীর্ষ তিনটি দল সরাসরি রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নেবে। মেক্সিকো এবং কোস্টারিকা আগেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে। শেষ ম্যাচে কোস্টারিকাকে হারিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় পানামা। অন্যদিকে চতুর্থ সেরা দল হিসেবে প্লে-অফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলবে হন্ডুরাস।

১৯৮৬ সাল থেকে বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। টানা সাতটি আসরে মাঠ মাতানোর পর এবার বিশ্বকাপে দর্শক হিসেবেই থাকতে হবে আমেরিকানদের।

এবার হলোনা চিলির বিশ্বকাপ খেলা

বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচেও অপ্রতিরোধ্য ব্রাজিলের দেখা মিলল। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে চিলিকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে ব্রাজিল। সেলেসাওদের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ল অ্যালেক্সিস সানচেজম ক্লদিও ব্রাভোর চিলি।

চিলির বিদায়ের দিন বলিভিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে উরুগুয়ে। অন্যদিকে লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিকে ইকুয়েডরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয় সেরা দল হিসেবে হিসেবে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় আর্জেন্টিনা।

দিনের অপর ম্যাচে পেরুকে ১-১ গোলে রুখে দিয়ে চতুর্থ সেরা দল হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় হামেস রদ্রিগেজ, রাদামেল ফ্যালকাওয়ের দেশ কলম্বিয়া। অন্যদিকে চিলির সমান ২৬ পয়েন্ট সত্ত্বেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় প্লে-অফে জায়গা করে নেয় পেরু।

বিশ্বকাপে যেতে হলে জয়ের বিকল্প নেই; ন্যূনতম সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে হলে ড্র করলেও চলতো চিলির। ব্রাজিলকে প্রথমার্ধে গোলশূন্য ড্রয়ে রুখে দিলেও বিরতির পর আর পেরে ওঠেনি চিলিয়ানরা।

সাও পাওলোর আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বিরতির পর খেলার ৫৫তম মিনিটে বার্সেলোনা তারকা পাওলিনহোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। দুই মিনিট পর ব্রাজিলের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন গ্যাব্রিয়েল জেসাস। এতেই কার্যত বিশ্বকাপের স্বপ্ন অনেকটাই শেষ হয়ে যায় চিলির। যোগ করা সময়ে চিলিয়ানদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন জেসাস।

দিনের অপর ম্যাচে কলম্বিয়ার কাছে পেরু হেরে গেলে বিশ্বকাপের স্বপ্ন টিকে থাকতো চিলির। তবে ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ে সানচেজের দল।