
দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ উইকেটে ৫৭৩ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ১৪৭ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ফলো অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে দিন শেষ করেছে বিনা উইকেটে ৭ রানে।
দ্বিতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য খুব বেশি সময় পরীক্ষা দিতে হলো না বাংলাদেশেকে। ১২ মিনিট খেলা হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে মিনিট পাঁচেক। বিনা উইকেটে ৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ইনিংস পরাজয় এড়াতেই এখনো প্রয়োজন ৪১৯ রান!
দক্ষিণ আফ্রিকার রান পাহাড়ের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই এলোমেলো টাইগাররা। আর ঘুরে দাড়াতে পারেনি তারা। ১৪৭ রানেই শেষ বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। সর্বেোচ্চ রান এসেছে লিটন দাসের ব্যাট থেকে। তিনি একমাত্র অর্ধশত রান করে ইজ্জত কিছুটা বাচিযেছেন। এছাড়া ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য। মুমিনুল ৪, মুশফিক ৭, মাহমুদউল্লাহ ৪, সাব্বির রহমান ০ , ইমরুল কায়েস ২৬ ও তাইজুল ১২ রান করে বিদায় নেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের বিপক্ষে শুরু থেকেই সাবধানী ছিলেন সৌম্য ও ইমরুল। তবে বেশিদূর এগোতে পারেন এই জুটি। ক্যাগিসো রাবাদার করা সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে সৌম্য বোল্ড হয়ে ফিরে গেলে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। এরপর ডোয়াইন অলিভিয়ের করা দশম ওভারের চতুর্থ বলে উইকেটের পেছনে কুইন্টন ডি কককে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মুমিনুল।
চাপের মুখে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব এসে বর্তায় মুশফিকের কাঁধে। কিন্তু দলকে চরম হতাশ করেছেন টাইগার দলনায়ক। অলিভিয়ের করা ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে টেম্বা বাভুমার দুর্দান্ত এক ক্যাচের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে বাংলাদেশের বিপদ বাড়ান মাহমুদউল্লাহ।
ওয়েন পারনেলের করা ১৫তম ওভারের প্রথম বলে চার হাঁকান মাহমুদউল্লাহ। পরের বলেই বিদায় নেন তিনি। পারনেলের বলে উইকেটের পেছনে ডি কককে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই বাংলাদেশ শিবিরে হানা দেন ক্যাগিসো রাবাদা। তার করা ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে ডি ককের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ইমরুল। কিছুক্ষণ পর রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন সাব্বির। সবমিলিয়ে বেশ নাজকু পরিস্থিতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ।
এর আগে ব্যাটসম্যানদের দাপটে বড় সংগ্রহ গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। শনিবার ৮৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা আমলা দিনের শুরুতেই সেঞ্চুরি তুলে নেন। কিছুক্ষণ পর তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন ৬২ রানে দিন শুরু করা ডু প্লেসিসও। আগের দিন ডিন এলগার ও এইডেন মার্করামও সেঞ্চুরি করেছিলেন।
আমলা ১৩২ রান করে আউট হন। ডু প্লেসিস ১৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গী কুইন্টন ডি কক করেন ২৮ রান। আগের দিন মার্করাম ১৪৩ এবং এলগার ১১৩ রান করে আউট হয়েছেন। ৭ রান করে আউট হওয়া টেম্বা বাভুমা নিজেকে ‘দুর্ভাগা’ ভাবতেই পারেন।
আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে এই নিয়ে চারবার বাংলাদেশের বিপক্ষে এক ইনিংসে প্রতিপক্ষের চারজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেন। এরমধ্যে পাকিস্তান ২০০১ সালে মুলতান টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে করে পাঁচ-পাঁচটি সেঞ্চুরি। অন্যদিকে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো দল বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টের কোনো ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি জুটি গড়েছে। মার্করাম-এলগারের ২৪৩ রানের জুটির পর ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করে আমলা-ডু প্লেসিস জুটিও।
বাংলাদেশের হয়ে শুভাশিষ রায় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন; তিনি ১১৮ রান খরচ করেন। রুবেল হোসেন ১১৩ রানের বিনিময়ে নেন একটি উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ১১৩ এবং তাইজুল ইসলাম ১৪৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন প্রথম টেস্টে ৩৩৩ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ।