
পচেফস্ট্রুম প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন বাংলাদেশকে ৩২০ রানে অলআউট করে ১৭৬ রানের লিড পেয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।শেষ দুটি উইকেট নিতে চা বিরতির পর খুব বেশি সময় লাগেনি দক্ষিণ আফ্রিকার।
চা বিরতির ঠিক আগের ৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে এলোমেলো হয়ে বাংলাদেশ! ১৩ রানের মধ্যে হারাল তিন উইকেট। ৩০৮/৮ স্কোর নিয়ে তৃতীয় দিনের চা বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশের অলআউট হওয়া সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। হলোও তাই। চা বিরতির পর ১৯ বলে ১২ রান যোগ করে অলআউট ৩২০ রানে । সেই পাঁচটি ওভার ঠিকমতো সামলে নিতে পারলে এত তাড়াতাড়ি কি অলআউট হয় বাংলাদেশ!
বাংলাদেশ এখনো ১৭৬ রানে পিছিয়ে। সাব্বির (৩০), মাহমুদউল্লাহ (৬৬) প্লেড অন হয়ে সাজানো ইনিংসের অপমৃত্যু টেনে এনেছেন। তাসকিনের রান আউটটারও প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এসব এখন শুধুই অতৃপ্তির তৃষ্ণা বাড়াচ্ছে মুশফিকদের।
এই টেস্টে অবশ্য বাংলাদেশ বেশ কিছু অর্জনের খাতায় আঁকিবুঁকি করছিল। পচেফস্ট্রুম টেস্ট শুরুই হয়েছে বাংলাদেশকে চমকে দিয়ে! দক্ষিণ আফ্রিকার প্রচলিত বাউন্সি ও গতিময় উইকেট নয়, পচেফস্ট্রুমে খেলা হচ্ছে ফ্ল্যাট উইকেটে! দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ন্যাড়া উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আগে আছে কি না সেটি বলা কঠিন হলেও এটা নিশ্চিত, এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় ইনিংস ব্যবধানে হারতে হচ্ছে না বাংলাদেশকে।
২০০২ ও ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যে চারটি টেস্ট খেলেছে প্রতিটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবারও সেটির শঙ্কা ছিল। তবে মুমিনুল-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ে চড়ে বাংলাদেশ ফলো অন এড়িয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ছিল ২৫২ (২০০২ সালে, ইস্ট লন্ডন টেস্টে)। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০০ রান পার করল। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩২৬ করেছিল বাংলাদেশ, প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশের যেটি সর্বোচ্চ। সেটি ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল মুশফিকদের সামনে। তবে তা পেরোতে পারেনি টাইগাররা।
এই টেস্ট দিয়ে আইসিসির যে কটি নতুন নিয়ম চালু হয়েছে, তার একটি ডিআরএসে পরিবর্তন। এখন থেকে ডিআরএসের ‘আম্পায়ার্স কলে’ রিভিউ নষ্ট হবে না। আম্পায়ার্স কলে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে রিভিউ হারাবে না দলগুলো। নতুন নিয়মের প্রথম প্রয়োগ দেখা গেছে আজ। দক্ষিণ আফ্রিকার রিভিউ দুটি অক্ষত থেকেছে তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহর বিপক্ষে এলবিডব্লুর আবেদন করে।
গতকাল চা বিরতির পর দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ঘোষণা করলে ওপেনিংয়ে নামতে পারেননি তামিম ইকবাল। কেন পারেননি, নিশ্চয়ই জেনেছেন। তামিম চা-বিরতির আগে ৪৯ মিনিট ছিলেন মাঠের বাইরে। নিয়ম অনুযায়ী তামিম যতক্ষণ মাঠের বাইরে ছিলেন, ঠিক ততক্ষণ তিনি ব্যাটিংয়ে নামতে পারবেন না। তামিম এই নিয়মের প্রথম ‘ভুক্তভোগী’ নন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো তাঁকে নামতে হয়েছে মিডল অর্ডারে।