
মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সঙ্কটের জন্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিকে (এআরএসএ) দায়ী করে সেনাবাহিনী ও সরকারের পক্ষে সাফাই গাওয়ায় আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েছেন ‘মিস মিয়ানমার।’ এর জেরেই মুকুটও খুইয়েছেন তিনি।
সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজকরা রোববার ১৯ বছর বয়সী ‘মিস গ্রান্ড মিয়ানমার’ শোয়ে ইয়ান সি’র খেতাব প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, গত সপ্তাহে সি অনলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতির জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দায়ী করে বলেন, সুন্দরী প্রতিযোগিতার একজন প্রতিযোগী হিসেবে তার দায়িত্ব শান্তির পক্ষে কথা বলা।
ভিডিওতে সি বলেন, “রাখাইন রাজ্যে ঘটে যাওয়া সহিংসতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ আমার মতামত জানতে চায় বলেই আমি নিজের দায়িত্ববোধ থেকে এ ভিডিও পোস্ট করেছি।”
ভিডিওতে সি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিকে (এআরএসএ) অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী করে বলেন, তারা প্রতারণা করে আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যম ও সুশীল সমাজের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে।
সি আরও বলেন, “এআরএসএ সেনাদের ওপর খেলাফত-স্টাইলে কল্পনাতীত হামলা চালিয়েছে। অথচ তারা ও তাদের মিত্ররা বিষয়টি এমনভাবে প্রচার করছে যেন মনে হচ্ছে উল্টো তারাই নিপীড়িত হচ্ছে।”
তবে প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন সি। তিনি বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারে এসে প্রকৃত পরিস্থিতি দেখে যাওয়ার আহবান জানাচ্ছি।’

ভিডিওতে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর নিপীড়ন এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে কোনও কথা বলা হয়নি।
আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজকরা সি’এর ভিডিওর বিষয়ে কিছু উল্লেখ না করে বলছে, “সি সুন্দরী প্রতিযোগিতার নিয়ম ভঙ্গ করেছেন এবং তার ব্যবহার একজন রোল মডেলের মতো নয়।”
সেকারণে আগামী ৫ থেকে ২৬ অক্টোবর ভিয়েতনামে অনুষ্ঠেয় মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ২০১৭ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারছেন না তিনি। কারণ, এ সুন্দরী প্রতিযোগিতার লক্ষ্য হচ্ছে যুদ্ধ বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
আয়োজকরা সরাসরি না বললেও ইয়েন সি তার ভিডিও ক্লিপের সঙ্গে মুকুট খোয়ানোর বিষয়টির যোগসূত্র টেনেছেন। আবার মিয়ানমারের একজন নাগরিক হিসেবে নিজের খ্যাতি কাজে লাগিয়ে দেশের প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে পেরে ধন্য হয়েছেন বলেও নিজের ফেইসবুক পাতায় লিখেছেন সি।
আর তাই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েও মিয়ানমারের জনগণের একাংশের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি। যাদের বেশির ভাগই মনে করে রাখাইন রাজ্যে যা চলছে তা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই।