
বাংলাদেশ যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বলে জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।কারণ মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে বাস্তুচ্যুত এই শরণার্থীদের কারণে বাংলাদেশকে বড় ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
রোববার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরো বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে সঙ্কট নিরসনের জন্য পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা চাই, সে অনুযায়ী যত দ্রুত সম্ভব এ সঙ্কটের সমাধান করা হবে।”
আগামী নভেম্বরে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলন সামনে রেখে এই প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল (ফিল্ড সাপোর্ট) লিসা এম বুটেনহেইমও সভার উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত নির্মূল অভিযানের মুখে গত ২৫ অগাস্টের পর থেকে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
“জায়গা আর সম্পদের সীমাবদ্ধতার পরও আমরা কেবল মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। এছাড়াও আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গাকে গত তিন দশক ধরে আমরা আশ্রয় দিয়ে রেখেছি।”
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের এই নাগরিকরা দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করায় বাংলাদেশের মানুষকে নানামুখী জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিয়ানমার তাদের সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি করেছে, মোতায়েন করেছে দুই ডিভিশন সেনা মোতায়েন।
গত ২৫ অগাস্টের পর থেকে অন্তত ১৯ বার মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও ড্রোন বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে, যাকে ‘উসকানিমূলক’ কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখছে ঢাকা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণগুলো তুলে ধরে এর নিরসনে পাঁচ দফা প্রস্তাব দেন।
মিয়ানমারে ‘জাতিগত নিধন’ বন্ধ করে সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল পাঠানো, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে নিরাপত্তা দিতে মিয়ানমারের ভেতরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা, রাখাইন থেকে বিতাড়িত সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের বাড়িঘরে ফিরিয়ে নেওয়া এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে এসব প্রস্তাবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির দপ্তরের মিনিস্টার উ কিয়া তিন্ত সোয়ে রোববার রাতে ঢাকা আসছেন। সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা।