দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মাসেতু ; বসানো হলো প্রথম স্প্যান

অবশেষে দৃশ্যমান হলো ন্বপ্নের পদ্মা সেতৃ

অবশেষে দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। আজ সেতুটির প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়। সকাল সোয়া ১০টার দিকে সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির ওপর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থেকে স্প্যান বসানোর কাজটি প্রত্যক্ষ্য করেন।

এর আগে মুন্সিগঞ্জে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ধূসর রঙের এই স্প্যান নিয়ে যাওয়া হয় জাজিরা প্রান্তে। এই স্প্যান বসানোর পরই পুরো সেতুটি দেখতে কেমন হবে তা বুঝতে পারছে সাধারণ মানুষ।

এমন আরও ৪১ টি স্প্যান বসানো হলে শেষ হবে পুরো সেতুর কাজ। প্রথম দিকে স্প্যানের রং সোনালি হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা ধূসর করা হয়েছে। ফলে পদ্মা সেতুটি দেখতে সোনালি রঙের না হয়ে ধূসর রঙের হবে।

সেতু প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার মাওয়া থেকে ৭বি স্প্যানটি ক্রেনে করে জাজিরার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ভায়াডাক্টসহ দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৯ কিলোমিটার। দ্বিতল এই সেতুটি হবে স্টিলের। পদ্মা সেতুতে কংক্রিটের ৪২টি খুঁটি বা পিলার হবে। আর এসব খুঁটির নিচে ২৭২টি পাইল বসাতে হবে।

সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, সেতুর দ্বিতীয় স্প্যানটি অক্টোবর মাসের শেষের দিকে স্থাপন করা হবে। ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ১২টি স্প্যান চীন থেকে শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এর আগে মাওয়ায় ১০টি স্প্যান চলে এসেছে।

সেতুতে মোট খুঁটি (পিলার) হবে ৪২টি। এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। বর্তমানে ১৬টি খুঁটি নির্মাণের কাজ চলমান।

পদ্মা সেতুর প্রতিটি খুঁটির নিচে ছয়টি করে পাইল বসানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে পাইলের সংখ্যা ২৪০টি। ইস্পাতের এসব পাইল মাটির নিচে ৯৬ থেকে ১২৮ মিটার পর্যন্ত গভীরে বসানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৬৮টি পাইলিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরও ১৭টি পাইল বসানোর কাজ চলমান রয়েছে।

পদ্মা সেতুর নিচের তলার ভেতর দিয়ে চলবে রেল। আর যানবাহন ওপরে পিচঢালা পথ দিয়ে চলবে। সরকার ২০১৮ সালের নভেম্বরে কাজ শেষে সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এই পিলারেই বসানো হবে প্রথম স্প্যনটি

মূল সেতুর কাজ করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজে নিয়োজিত আছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন। পদ্মা সেতুর কাজ ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মূল সেতু ও নদীশাসন হচ্ছে বড় দুটি কাজ। এর বাইরে দুই পারে সংযোগ সড়ক ও টোলপ্লাজা নির্মাণ এবং অফিস, বাসাসহ নির্মাণ অবকাঠামোর কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৪৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুতে মোট ৪২টি পিলার থাকবে। এর মধ্যে ৪০টি পিলার নির্মিত হবে নদীতে এবং দুটি নদীর তীরে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগামী বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।