সব রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চান সু চি: জানালেন বৃটিশ প্রতিমন্ত্রী

মিয়ানমার স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সব রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চান মিয়ারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। একথা জানিয়েছেন মিয়ানমার সফরে করে আসা ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড। তিনি বলেছেন, অং সান সু চি বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চান বলে তাকে জানিয়েছেন।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর পশ্চিমা কোনো দেশের প্রতিনিধি হিসেবে ফিল্ডই প্রথম ওই রাজ্য সফর করেছেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “তিনি (সু চি) আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, তিনি সব শরণার্থীকে বার্মায় ফিরিয়ে নিতে চান।”

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার নিন্দায় সরব হলেও এই সময়ে দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সু চির পাশে দাঁড়ানোর কথা বলছেন তারা।

মিয়ানমার ঘুরে আসা ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী ফিল্ডের কথায়ও সেই প্রতিধ্বনি। তিনি বলেন, সু চি একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছেন এবং তিনি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপের মধ্যে একটি ‘সঠিক লাইন’ বের করার চেষ্টা করছেন।

পাঁচ দশকের বেশি সময় সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারে গত বছর সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সু চির দল ক্ষমতায় এলেও এখনও রাষ্ট্রীয় অনেক কিছুর নিয়ন্ত্রণ দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে।

রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে মার্ক ফিল্ড বলেন, “আমি নিজের চোখে ভয়াবহ অবস্থা দেখেছি। আমরা এখন যা করতে পারি তা হল, আমাদের বন্ধুদের দিয়ে যত সম্ভব চাপ প্রয়োগ।”

ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই সংকট সমাধানে পর্দার অন্তরালে অনেক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে এবং এটা এখন আর একটি আঞ্চলিক ইস্যু নয়“এই পর্যায়ে আমরা সব ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাব।”

এই পর্যায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার চেয়ে কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধানের দিকে এগোনোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, সু চি যদি ব্যর্থ হন তাহলে সেনাবাহিনী ‘সর্বময় ক্ষমতার’ অধিকারী হবে এবং সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হবে ।

মিয়ানমারের রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর গত ২৫ অগাস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ওই অভিযানকে জাতিসংঘ চিহ্নিত করেছে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে।

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে দেশটির নেত্রী সু চির সঙ্গে বৈঠকে সংকট অবসানে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন মার্ক ফিল্ড।

তিনি বলেন, এখনই সহিংসতা বন্ধ, রাখাইনে মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের অনুমতি এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নসহ তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন।