সব ধরনের ক্ষেপনাস্ত্র ও পারমানবিক কর্মসূচী বন্ধের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন

পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রের কাজ বন্ধসহ সব ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ স্থগিত ঘোষণা করেছে উত্তর কোরিয়া। ।

অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখা এবং কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)।

“২১ এপ্রিল থেকে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক পরীক্ষা ও আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ বন্ধ রাখবে,” কিমের বরাত দিয়ে জানায় দেশটির এ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।

বিবিসি বলছে, সামনের সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনার আগে উত্তরের শীর্ষ নেতা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত নিলেন।

জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও কিমের শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ও পারমাণবিক পরীক্ষা নিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

টুইটারে তিনি বলেন,“উত্তর কোরিয়া ও পৃথিবীর জন্য এটি খুবই ভালো সংবাদ, বিরাট অগ্রগতি।”

এর আগে বৃহস্পতিবারও তিনি বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক পথ থেকে সরে এলে তাদের জন্য ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ’ অপেক্ষা করছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্রও পিয়ংইয়ংয়ের এ পদক্ষেপকে ‘অর্থবহ অগ্রগতি’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। এ ঘোষণা দুই দেশের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেছে মুন জায়ে ইনের দপ্তর।

১৯৫০-৫৩ পর্যন্ত দুই কোরিয়ার যুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধ সমাপ্তিতে কোনো শান্তিচুক্তি না হওয়ায় উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া এখনও ‘কার্যত যুদ্ধবিরতির’ মধ্যে আছে।

মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ ও পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির কারণে দশককাল ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা উত্তর কোরিয়ার আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে গত মাসে বিশ্বকে বিস্ময় উপহার দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

ফেব্রুয়ারিতে পিয়ংচ্যাংয়ে হওয়া শীতকালীন অলিম্পিককে কেন্দ্র করে উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে সম্পর্কের বরফ কমে আসার ধারাবাহিকতাতেই ওয়াশিংটনকে ট্রাম্প-কিম বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

প্রস্তাব গ্রহণ করে ট্রাম্প জুনের প্রথম দিকে কিংবা তারও আগে উত্তরের শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। বৈঠকস্থল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বেশ কয়েকটি স্থানকে বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও পরে জানিয়েছেন তিনি।

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, দুই কোরিয়ার ডিমিলিটারাইজ জোন কিংবা বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতৃত্বের এ সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে; সম্ভাবনা আছে অন্য কোনো এশীয় দেশ, ইউরোপ এমনকী আন্তর্জাতিক জলসীমায় কোনো নৌযানের মধ্যে হওয়ারও।