
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ছয়টি ধারা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সম্পাদক পরিষদ নেতারা। সরকারের সংশ্লিষ্ট তিনজন মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে এই উদ্বেগের কথা জানান সম্পাদকরা।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে একটি গ্রহণযাগ্য ও যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের কথা বলেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সচিবালয়ের আইন মন্ত্রনালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সম্পাদকদের পক্ষে গভীর উদ্বেগের বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
তিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেড় ঘণ্টার রুদ্ধদার বৈঠক শেষে মাহফুজ আনাম সাংবাদিকদের বলেন, “সম্পাদক পরিষদের অনুরোধে এই সভা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে বলতে চাই, উনাদের (তিন মন্ত্রী) যে স্পিরিট আমরা দেখলাম, উনাদের যে সহযোগিতার স্পিরিট এবং আমাদের কনসার্নগুলো উনারা যেভাবে গ্রহণ করলেন এবং যে প্রস্তাব উনারা দিয়েছেন স্থায়ী কমিটিতে যে আলোচনা হবে সেখানে উনারাই প্রস্তাব করবেন সম্পাদক পরিষদকে যেন ডাকা হয় এবং সেখানে যেসব কনসার্ন আছে আমরা তা তুলে ধরব।
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫, ২৮, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বোগের কথা জানিয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, “আমরা মনে করছি, এগুলো বাক স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার পরিপন্থি।
“এবং এটা আমাদের যে স্বাধীন সাংবাদিকতা, যেটা নিয়ে বাংলাদেশে আমরা খুবই গর্ববোধ করি, সেটা খুব গভীরভাবে ব্যাহত হবে এবং এ কথাগুলো উনাদের বলেছি, উনারা খুবই সানন্দে গ্রহণ করেছেন।”
মাহফুজ আনাম আশা প্রকাশ করেন, যে আইনটি হবে, তা সত্যিকার অর্থেই সাইবার ক্রাইম ঠেকাতে ব্যবহার করা হবে, তাতে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা খর্ব হবে না।
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ছয়টি ধারা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও সম্পাদক পরিষদ এ আইন প্রণয়নের পক্ষে বলে জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক।
এসময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আগামী ২২ এপ্রিল আইিসটি স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সম্পাদকদের এই উদ্বেগের বিষয়গুলো উত্থাপন করা হবে।
মন্ত্রী জানান, সকলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি গ্রহণযোগ্য ও যুগোপেযাগী আইন প্রণয়ন করা হবে।
বৈঠকে সম্পাদকদের মধ্যে মাহফুজ আনাম ছাড়াও নিউজ টুডের রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, প্রথম আলোর মতিউর রহমান, নিউ এজের নূরুল কবির, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, ইনকিলাবের এ এফ এম বাহাউদ্দিন, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সংবাদের খন্দকার মুনিরুজ্জামান, কালের কণ্ঠের ইমদাদুল হক মিলন, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন এবং বণিক বার্তার দেওয়ান হানিফ মাহমুদ অংশ নেন।